শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০

Alcohol Consumption in Bangladesh is on the RISE!

Alcohol consumption poses serious threat to human health and is responsible for causing more than 200 diseases. Alcohol consumption results in 3.3 million deaths per year worldwide. Of all deaths worldwide, 5.9% are due to alcohol use, a figure higher than deaths from human immunodeficiency virus infection (2.8%) and tuberculosis (1.7%). According to World Health Organization (WHO), it is among main four modifiable risk factors for no communicable diseases. In Bangladesh, the consumption of alcohol is strictly prohibited both as a social function and as a religious rite by most of the religions. Yet, the problem of alcoholism is becoming a threat to the nation’s welfare. Information obtained from law enforcement authorities, treatment providers and other sources indicate that problems of alcohol abuse have become quite common in Bangladesh.

Social Phenomena

Cultural and religious determinants have great impact on alcohol consumption among different classes of Bangladeshis. Considerable proportion of indigenous population of Bangladesh consume alcohol for social recreation, ritual and religious purposes. Alcohol consumption in some working classes like workers in morgue, boot makers and tea factory laborers is reported to be higher. Nonetheless, it has been reported that among people with higher income, alcoholic drinking is also popular and is considered as a sign of “modernity” or “westernized life style”.

Alcohol and government policies in Bangladesh

According to the “Intoxicant Control Act” of Bangladesh (1990), alcohol means spirit or liquor of whatever kind (wine, beer), or any liquid containing more than 0.5% alcohol. Specific license is required for establishing a distillery or brewery, possession, storage and consumption of alcohol. Consumption of alcohol is illegal unless for: a) Muslim citizens who receive a permission for alcohol use on a health ground from either a civil surgeon or an associate professor of medicine, b) sewage cleaners, morgue workers, coolie (day laborer) in a tea estate, boot makers and indigenous people residing in Chittagong Hill Tracts or CHT c) international tourists and businessmen who consume alcohol in a licensed bar, and d) non-Muslim citizens (with permit). This act has some loopholes as; the act does not specify the health conditions for which a Muslim may be allowed to use alcohol and the decision rests on the authorized physician. Furthermore, because of multiethnic background of Bangladesh and to avoid interfering with old traditions and local culture, use of alcoholic beverages was announced as permissible for indigenous people after an amendment to this act in 2001. Therefore, there is partial ban on alcohol use. It is interesting that only the Muslim citizens are punishable under this act and others are not. There is no minimum age limit for drinking alcohol.

Types of liquor available

Different types of beverages with varying alcohol content, available in different parts of Bangladesh. It can segmented in two ways as industrially produced name as ; Country liquor, Foreign liquor, Toddy, Beer and Spirit. All brands of Carew and company contain 42.8% ethanol. Homemade brews or Local alcoholic beverages called cholai, tari, Pochani, Ekchuani, Dochuani and Bangla Mad consumed by the lower socioeconomic classes.

Prevalence of alcohol use in Bangladesh

WHO and Food and Agricultural Organization reports in 2004, 2011 and 2014 have shown an increasing trend in alcohol per capita consumption (APC) in Bangladesh. Binge drinking or heavy episodic drinking has been reported in 20.2% of Bangladeshi drinkers and the majority of them were found to be within 25-44 age group. According to 2014 WHO report; alcohol dependence in Bangladesh was estimated to be 0.7% in general population. However, in certain professions or population are prevalence’s such as vehicle drivers, sex workers, substance abusers with, street (homeless) children (11-18 years old) and university students. There are roughly 4.6 million drug abusers in Bangladesh. Therefore, about 510,600 alcohol abusers likely exist among drug addicts. But alcohol use prevalence in Bangladesh is approximately 24 times higher than estimated legal consumers. Alcohol consumer is generally higher male than female.  Regarding the age of alcohol consumers in Bangladesh the majority are within 25 to 44 years of age.

Toxic alcohol ingestions

According to epidemiologic studies on poisonings in Bangladesh, total of 635 deaths due to alcohol overdose and toxic alcohol ingestion have been reported since 1990s. Illegal homemade beverages came to attention after mass poisoning outbreaks of methanol happened in different parts of the country. Nineteen incidents of methanol mass poisoning were reported during 1998 to 2014 in Bangladesh. During the same period 273 deaths were reported from methanol toxicity. The other highly toxic alcohol, diethylene glycol, was responsible for 363 deaths during the period of 1990 to 1995 and the year 2009.

Alcohol-related morbidities

Critical organ damages due to chronic toxicity of alcohol drinking such as chronic liver disease (CLD) and hepatocellular carcinoma have been observed in different extents in Bangladesh. Long-term effects on liver was studied among indigenous people of CHT with history of consumption of more than 60 g alcohol in each sitting over 10 years. Alcohol abuse is also instigate physical injuries from accident or violence.

Concern and Way Forward

Estimated prevalence of alcohol consumers in general population of Bangladesh is low (1.9%). The results were also consistent with low prevalence of alcohol use in countries with Muslim majority. However, we found that the alcohol consumption in Bangladesh is on the rise. Increase in domestic production, increased number of permits issued for drinking and massive amount of seizures of illegal liquor suggest that actual amount of alcohol use may be much higher than the official reports. This is probably due to the fact that many consumers purchase alcoholic drinks from illegal vendors and are still unaccounted for.  Higher prevalence of alcohol use among the university students, truck drivers, sex workers, substance abusers, homeless children, indigenous people, and in families with positive history for alcohol drinking, implies the need to formulate cost effective prevention programs for specific society groups and clusters. Targeted intervention among high-risk population to encourage them to consume alcohol within a safe limit or to quit drinking will be an effective measure. 

বুধবার, ৬ মে, ২০২০

বাংলাদেশের শ্রম অভিবাসন ও অর্থনীতির উপর করোনাভাইরাসের প্রভাব এবং আমাদের করনীয়

মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধ ও সংক্রমণের মাত্রা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সমগ্র বিশ্বব্যাপী লকডাউন অবস্থা বিরাজমান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বিশ্বের প্রায় ৮০’র অধিক দেশে এই  লকডাউন অবস্থা বিরাজমান। লকডাউনের ফলে এসব দেশে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে আছে। দেশে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে কম-আয়ের জনগোষ্ঠি, আদিবাসি, প্রতিবন্ধি ব্যক্তি, অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি, দিনে এনে দিনে খাওয়া জনগোষ্ঠি, নারী কেন্দ্রিক পরিবার, অভিবাসী ও তার পরিবার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) পূর্বাভাস দিয়েছেন করোনা’র ফলে সারা বিশ্বে প্রায় ১৯ কোটি মানুষ চাকরি হারাতে যাচ্ছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো চাকরি হারাতে যাচ্ছে সাড়ে ১২ কোটি মানুষ। বলা হচ্ছে বিশ্বের মোট কর্মশক্তির প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পেশা কোন না কোনভাবে কোভিড-১৯ এর কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বাংলাদেশের শ্রম বাজার বলে পরিচিত ইউরোপে চাকুরি হারাবে ১ কোটি ২০ লাখ, মধ্য প্রাচ্য ও আরব দেশে চাকুরি হারাবে প্রায় ৫০ লাখ কর্মী। এসব দেশে চাকরিচ্যুতির মূল শিকার হবেন অভিবাসি শ্রমিকরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন  বিদেশ কর্মরত স্বল্প দক্ষের শ্রমিক, ভাসমান অভিবাসী শ্রমিক ও যাদের কোনো স্থায়ী চাকুরী নেই । লকডাউনের ফলে এখন তাদের কোনো কাজ নেই, আয় নেই, অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে ও লোক ছাটাই শুরু করেছে। যার ফলে অনেকে বাধ্য হচ্ছেন বা বাধ্য করছেন দেশে ফেরত আসতে।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা আইওএম এর মতে গত একমাসে  (ফেব্রুয়ারী-মার্চ’২০২০) প্রাই ৪ লক্ষের অধিক অভিবাসী বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন। অধিকাংশই ফেরত এসেছেন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে। স্থল বন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন প্রায় ১০,০০০ বাংলাদেশী অভিবাসী। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে ও দেশের বাইরে মারা গেছেন প্রায় পাচঁঁশত অভিবাসী। যেসব অভিবাসীরা বিদেশে রয়ে গেছেন লকডাউন বা অবরোধের ফলে তারা বেকারত্ব, ক্ষুধা, আবাসন সংকট এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকিতে ভুগছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অভিবাসীরা দেশে ফেরত এসেছেন তাদের অধিকাংশই কম আয়ের, সাধারণত গন্তব্য দেশে তারা সেলসম্যান, নির্মাণ শ্রমিক ও খাবার হোটেল/রেষ্টুরেন্টে খন্ড কালীন কাজ করতেন। এই ফেরত অভিবাসীর অধিকাংশই দেনাগ্রস্থ। ফেরত অভিবাসীর অধিকাংশই তাদের পরিবারের একমাত্র উর্পাজনশীল এবং তাদের সম্পত্তি বলতে শুধুই তাদের বসতভিটা ও সামান্য কিছু আবাদি জমি। অনেকে আবার সেটাকে বন্ধক রেখে বিদেশে গিয়েছিলেন। যেসব অভিবাসী আবার ফিরে যাবার ইচ্ছা ছিল, দীর্ঘদিন লকডাউনের ফলে তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ফেরত অভিবাসীর বিশাল অংশ তাদের গন্তব্য দেশে নিয়োগকর্তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারেছন না, যোগাযোগ করতে পারেছন না কোনো সরকারি অফিস (ডেম্যু) এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে। যার ফলে তারা পড়েছে চরম অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার মধ্যে। লকডাউনের কারনে দীর্ঘদিন দেশে থাকার কারণে অভিবাসীরা দেশে ফেরার সময় সংঙ্গে যে পরিমাণ টাকা নিয়ে এসেছিলেন তাও  শেষ হয়ে এসেছে। অনেক অভিবাসী আত্মীয় স্বজন থেকে আবার দেনা করা শুরু করেছেন। অবরোধ চলমান থাকার কারণে তারা স্থানীয় পর্যায়ে কোন কাজও পাচ্ছেন না। আর যেসব অভিবাসী বিদেশে রয়ে গেছেন তারা পড়েছেন চরম আর্থিক সংকটে। এই সময় বিদেশে কোন কাজ না থাকার কারনে, অনেকে বেতন পাচ্ছেন না বা অনিয়মিতভাবে বেতন পাচ্ছে। যারা ফলে দেশে অবস্থানরত সেই সমস্ত অভিবাসীর পরিবার পড়েছে আর্থিক সংকট ও অনিশ্চয়তার মধ্যে । এই সময় দেশে ফেরত আসা অভিবাসীরা সামাজিক বৈষম্যের ও শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে,  অনেকক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের বিস্তার এর জন্য শুধুমাত্র অভিবাসীদের দায়ী করা হয়েছে, তাদের বাড়িতে লাল পতাকা ঝুলিয়ে সামাজিকভাবে আলাদা করে দেবার অভিযোগ রয়েছে। অনেক অভিবাসী সংঙ্গরোধ না মানার অভিযোগ ও উঠেছে।

অথচ অভিবাসীদের ঘামের টাকা সচল রাখছে দেশের অর্থনীতির চাঁকা। গত বছরও এই অভিবাসাী হিরো’রা ১৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠান, যা দেশের অর্থনীতিকে চাঁকাকে সচল রেখেছে। প্রতিবছর দেশের কর্ম-সংস্থানের বিশাল সংস্থান যোগাচ্ছে এই খাতটি। বাংলাদেশ থেকে প্রতিমাসে গড়ে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার কর্মী বিদেশ যেতেন, গত মাসে তার সংখ্যা একবারে শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। অভিবাসাীদের পাঠানো অর্থ দিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে টিকে আছে প্রায়ই চার কোটি পরিবার। অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য দরকার এই রেমিটেন্সের চলমান প্রবাহ। করোনা পরবর্তীতে যে অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলা হচ্ছে সেই সময় দেশে ও দেশের বাইরে অনেকে চাকুরী হারাবে। এই অবস্থায় টিকে থাকা ও উন্নয়ন চলমান রাখার জন্য চাই স্বল্প ও মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা। করোনা উত্তর বিশ্বজুড়ে যে কর্ম-সংস্থান এর সুযোগ তৈরী হবে তার জন্য আমাদের নিতে হবে বিশেষ পরিকল্পনা। 

ইতিমধ্যে, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ জনমনে আস্থা ও সম্ভাবনা তৈরী করেছে। বিশেষ করে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড অভিবাসীদের সেবা দেবার জন্য অর্থ সরবরাহ করেছে এবং ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, যা সময়উপযোগী ও প্রশংসীত।  এই এক কোটি অভিবাসী এবং তাদের পরিবারের জন্য আরও বড় তহবিল গঠন করতে হবে। এই তহবিল হবে বাংলাদেশের সরকারের, গন্তব্য দেশের সরকার, নিয়োগকর্তা ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার সমন্বয়ে তহবিল। অভিবাসীদের নিজস্ব টাকায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যান তহবিল থেকে নয়। 

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারনে যে সমস্ত অভিবাসী দেশে ফিরছেন বিমানবন্দরে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের হাত খরছের জন্য দেওয়া হচ্ছে পাচঁ হাজার টাকা। এইক্ষেত্রে পরামর্শ রয়েছে এই টাকা যেন বিদেশ ফেরত সবাই পায়, শুধু যারা সব আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া করে বিদেশে গিয়েছিলেন তারাই যেন নয় এবং টাকার পরিমাণ যাতে বৃদ্ধি করানো হয়। 

সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষনা করা হয়েছে যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনো বাংলাদেশী কর্মী মারা গেলে তিন লক্ষ টাকা পাবে। এইক্ষেত্রে পরামর্শ রয়েছে, এই টাকার পরিমাণ যেন বৃদ্ধি করানো হয়। কেননা স্বাভাবিক কারণেও যদি কোনো বাংলাদেশী কর্মী বিদেশে মারা যায় তাকেও সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়। 

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারনে যে সমস্ত অভিবাসী দেশে ফিরে আসবেন তাদের প্রত্যেককে পাচঁ থেকে সাত লক্ষ টাকা ঋণ পাবেন। এই টাকা দিয়ে বিদেশ ফেরত অভিবাসীরা কৃষি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারবেন।  এইক্ষেত্রে পরামর্শ রয়েছে, এই টাকার পরিমাণ যেন বৃদ্ধি করানো হয় এবং সহজ শর্তে সঠিক ব্যক্তিকে যেন দেওয়া হয়। 

দেশের অর্থনীতিতে অভিবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করে, করোনা চলাকালীন ও পরবর্তীতে দেশের অর্থনীতির চাঁকাকে সচল রাখার জন্য নিম্নের বিষয়গুলোকে অনুধাবন করতে হবে। স্বল্প ও মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে।

- বিশেষ করে, এই সময়ে যে সমস্ত অভিবাসী দেশে ফেরত এসেছেন বা যে সমস্ত অভিবাসী বিদেশে অবস্থান করছেন, লকডাউনের কারনে দেশে টাকা পাঠাতে পারছে না তাদের পরিবারকে প্রয়োজনে জরুরী খাবার, স্বাস্থ্য বিষয়ক উপকরণাদি বিতরণ, নগদ অর্থ সহায়তা ও করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক জ্ঞান বিষয়ে অবহিত করতে হবে। যাতে তারা নিরাপদ ও সুস্থ থাকেন। প্রয়োজনে সরকারের সেফটি নেট প্রোগ্রামের আওতায় আনতে হবে।

- যে সমস্ত অভিবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের ভিসা নবায়নের জন্য কাজ করতে হবে। যে অভিবাসী তার নিয়োগকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেছে না তার সাথে তার নিয়োগকর্তার সংযোগ স্থাপনে সহযোগিতা করতে হবে। যে সমস্ত অভিবাসী আর্থিক সংকটের কারনে ফ্লাইট খরছ সংস্থান করতে পারবে না তাদের ফ্লাইট খরছ জোগাড় করে দিতে হবে।

- যে সমস্ত সম্ভাব্য অভিবাসী বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিল, করোনা পরিস্থিতির কারণে সবকিছু আটকে গেছে তাদের পরিবারকে প্রয়োজনে আর্থিক ও মানসিক সহযোগিতা প্রদান করা। সম্প্রতী প্রকাশিত এক খবরে জানা যায়, সৌদি আরব বেসরকারিখাতে সব ধরনের ভিসা বন্ধ করে দিচ্ছে। এর ফলে প্রায় এক লক্ষ অভিবাসী প্রত্যাশীর সৌদি আরবে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন সৌদি আরবে যারা অবস্থান করছে তাদের ভিসার মেয়াদ নবায়ন করা নিয়ে তৈরী হয়েছে শংকা। উদ্ভুট পরিস্থিতিতে বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়ায় যাতে বন্ধ না হয় তার জন্য শ্রমগ্রহণকারী রাষ্ট্র ও নিয়োগকর্তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা। প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরী হলে, সম্ভাব্য অভিবাসীকে তার বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত  দেবার ব্যবস্থা করা।

- যে সমস্ত অভিবাসীরা করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়েছিল,তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সমূহ যথাযথ কর্তৃাক্ষের সাথে আলোচনা করে তা প্রদানে নিশ্চিত করা।

- বিশেষ করে, এই বিশেষ সময়ে লক্ষ করা যাচ্ছে বেশ কিছু  শ্রমগ্রহণকারী রাষ্ট্র অনিয়মিত অভিবাসীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী। জরুরী অবস্থায় নিয়মিত-অনিয়মিত সকল অভিবাসীদের সুরক্ষা, শ্রমগ্রহণকারী দেশের কর্তব্য। এমতাবস্থায় আমাদের উচিত জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা। 

- বিদেশে অবস্থানকারী সমস্ত বাংলাদেশীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, আর্থিক সহযোগিতা, করোনাভাইরাস নির্ণয় ও আক্রান্ত হলে শ্রমগ্রহণকারী রাষ্ট্রের সার্বিক তত্বাবধানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে নারী অভিবাসীদের কর্ম পরিবেশের নিরাপত্তা ও অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এই সার্বিক কল্যাণে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী দূতাবাস, মিশন ও কনস্যূলেটে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা এই বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা ও প্রয়োজনে শ্রমগ্রহণকারী রাষ্ট্রের কর্মকর্তা ও নিয়োগকর্তার সাথে আলোচনা করে বাংলাদেশীদের স্বার্থ সুরক্ষা করা।

- করোনাভাইরাস বিস্তারের জন্য অজান্তেই অভিবাসী পরিবারগুলোর প্রতি মানুষের একটা নেতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের গ্রামে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। মরদেহ সৎকারের আপত্তি উঠেছে অনেক এলাকায়। চিকিৎসা সেবা নিতে যেয়েও তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই নেতিবাচক মনোভাব থেকে সমাজকে বের করতে চাই সরকার, গণমাধ্যম এবং বেসরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক উদ্যোগ।

- বাংলাদেশে ফেরত আসা অভিবাসীদের একটি নির্ভরযোগ্য ডাটাবেইজ গঠন করা। বিশেষ করে, করোনা কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্থ অভিবাসীদের তালিকা করতে হবে।  বর্তমানে, করোনা বিশেষ পরিস্থিতিতে  ফেরত বাংলাদেশীদের একটা ডাটাবেইজ পাওয়া গেলেও তাতে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ফেরত অভিবাসীদের তথ্যের জন্য  সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সম্পৃক্ত করে এই ডাটাবেইজের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। ফলে ফেরত আসা অভিবাসীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যাবে এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও মেধাকে পরবর্তীতে কাজে লাগানো যাবে। বিশেষ করে এই ধরনে দুর্যোগ পরিস্থিতিতে এই ডাটা বেশ কাজে লাগবে। এই ডাটাবেইজের কাজটি তেমন জটিল হবে না, কারণ আমাদের বিদেশ যাওয়া কর্মীদের পূর্ণাঙ্গ ডাটা রয়েছে, তার সাথে ফেরত আসা কর্মীদের লিংকেজ করালেই পুরো বিষয়টির একটি সঠিক হিসাব পাওয়া যেতে পারে। 

- বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী ব্যবস্থাপনা বিধিমালা,২০১৭ সংশোধন করে, মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ অভিবাসীদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়টি অর্ন্তভূক্ত করতে হবে। 

- আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) মতে করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দশটি অভিবাসী প্রবণ জেলার ( ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, কুমিল্লা, সিলেট, বরিশাল, ব্রাক্ষণবাড়িয়া ও চাদঁপুর ) অভিবাসীদের আর্থ-সামাজিক ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেছেন। তাই আমাদের অভিবাসী পূর্ণবাসন পরিকল্পনায় এই দশটি জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

- সর্বোপরি করোনা পরিস্থিতির জন্য সবচেয়ে প্রভাব পড়েছে রেমিটেন্স প্রবাহে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের মতে গত মার্চ মাসে প্রবাসীরা যে পরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছে যা বিগত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন যা খুবই চিন্তার বিষয়। তার জন্য আমাদের এখনি ভাবতে হবে। বাংলাদেশের যে শ্রম বাজারগুলো রয়েছে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও পূর্ব-এশিয়া সেই সমস্ত দেশের সাথে পারস্পরিক সর্ম্পক বৃদ্ধি করতে হবে। নতুন নতুন শ্রম বাজার খুঁজতে হবে। করোনা পরবর্তীতে যে সুযোগ তৈরী হবে, তার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠি তৈরী করতে হবে। যে সমস্ত শ্রমিকরা দেশে আসতে চাইছে বা বিদেশে বিপদগ্রস্থ তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। ফেরত আসা অভিবাসীদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে একীকরণ করতে হবে। তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে হবে প্রয়োজনে স্বল্প-দক্ষদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করতে হবে। অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই করোনা পরবর্তীতে আমাদের অর্থনীতির চাঁকা সচল থাকবে। 

বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২০

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নির্ণয় করবে COVIS

ওর্য়াকিং হোমের (সরকারি বিশেষ ছুটি) আজ ২১ তম দিন পার হল। এই দিনগুলোতে আমাদের অনেকেরই বেশ আচরণগত পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে আমাদের পরিবারে, যেমন, আমার ছোট মেয়ে (ফারিসা) যার বয়স দুই বছরের কম, তার হাত ধোয়ার অভ্যাস, হাছিঁ কাশির শিষ্টাচার এর চর্চা, আমার ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সপ্তাহের বার ভুলে যাওয়া, সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আতংকিত না হওয়া, বইপড়া, নিয়মিত নামায পড়া, কোরআন তেলোয়াত করা, আত্মীয়-স্বজনদের ফোন করা, স্বল্প পরিসরে পারিবারিক কাজে সহায়তা করা ও আমার কন্যাদের সময় দেওয়া। সমাজের মানুষগুলোর মধ্যে এসেছে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন যেমন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, আত্ম-সমালোচনা করা ইত্যাদি।

বিশেষ করে, এই কঠিন সময়ে, যাদের অবদান ও ত্যাগ আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করছে, যেমন আমাদের চিকিৎসক, নার্স , স্বাস্থ্যকর্মী, নিরাপত্তা ও সরকারী নির্দেশ বাস্তবায়নে নিয়োজিত আামাদের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মাঠ প্রশাসন, সাংবাদিক, ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবক ও জরুরী প্রয়োজনে পরিচালিত বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ। তাদের এই ত্যাগের জন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাদের এই ত্যাগ দেখে আমার নিজেরও খুব ইচ্ছা করে, আমি যদি এই সময় কিছু করতে পারতাম। তাহলে নিজেকে হালকা অনুভব করতাম। তাই চেষ্টা করলাম আমি আমার জ্ঞান ও ইচ্ছা দিয়ে কি করা যায়, কিভাবে এই ক্রান্তি লগ্নে নিজেকে সামিল করা যায়। সেই তারনা ও দায়িত্ববোধ থেকে ভাবলাম আমি যদি একটি বিশেষ ওয়েভ এপ্লিকেশন বানাতে পারতাম যার মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসে এই প্রাণঘাতি করোনাভাইারাসের ঝুঁকির মাত্রা নির্ণয় করতে পারে। তাহলে মানুষের মধ্যে যে আতংক বিরাজ করছে তা কিছুটা হলেও কমবে ও মানুষ সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য ও দিক-নির্দেশনা পাবে।

ইচ্ছা অনুযায়ী কাজে শুরু করলাম, দিনের বেলায় অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে, রাতের বেলায় কম ঘুমিয়ে এই বিষয়ে পড়াশুনা শুরু করলাম, গুগল সার্চ, ইউটিউব দেখা, ক্লাসের লেকচার দেখা, পরিচিত আইটি প্রফেশনাল বন্ধুদের ফোন দেওয়া এসব করে গত ২৮ মার্চ ২০২০ তারিখে পাইথনে একটি প্রোগ্রামিং লিখলাম। এই কোডটি ভালোই কাজ করছিল। পরবর্তীতে ২৯ মার্চ দেখলাম সরকারের পক্ষ থেকে অনলাইনে করোনাভাইারাসের ঝুঁকির মাত্রা নির্ণয়ের একটি এপ্লিকেশন প্রকাশ হয়, যা কিনা আমার আইডিয়ার সাথে অনেকটা মিল। আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানালাম এবং বললাম এটি দরকার ছিল। পরে আমি আমার প্রেরণা থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি, মনে মনে ভাবলাম নতুন একটা কিছু করব, কিন্তু আর হল না। এইটা নিয়ে ফেসবুকে একটা পোস্ট ও দিলাম যে, আমার নতুন কিছু করার সুযোগটা মিছ হয়ে গেল। আমার পরিবার, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শুভাকাঙ্খী ও বন্ধুরা বলল সরকার এপ্লিকেশন বানিয়েছে, তাতে কি হয়েছে আমি যেন আমার চেষ্টা চালিয়ে যাই।

কিছুদিন পর, আমার বেগম ও বড় মেয়ে (ফাইযা) ইচ্ছা ও অনুপ্রেরণায় অনুপ্রেরিত হয়ে করোনাভাইারাসের ঝুঁকির নির্ণয়ের এপ্লিকেশনটি নিয়ে আবার কাজ শুরু করলাম। পাইথনে গ্রাফিকেল ইউজার এন্টারপ্রাইজে আমার নলেজ একেবারে কম বিধায়, বিকল্প চিন্তা শুরু করলাম। কিভাবে দ্রুত এই এপ্লিকেশনটি শেষ করা যায়। পরবর্তীতে, ফ্রন্ট এন্ডেড এনভায়রনমেন্ট এর কথা চিন্তা করলাম এই বিষয়ে আমার অল্প কিছু ধারনা রয়েছে, বাকিটা গুগল দেখে করে নেওয়া যাবে। যে কথা সেই কাজ, এইচটিএমএলে কোড লিখলাম, সিএসএসে ডিজাইন করলাম আর জাভাস্ক্রিপট দিয়ে যোগ বিয়োগ ও লজিকের কাজগুলো করলাম। এভাবে আমার বেসিক কাজগুলো শেষ করলাম। এবং নিজে একটি ডোমেইন কিনে www.tec4society.com  সাইটে হোস্টিং করলাম। দেখলাম যে, এই সার্ভিসটি কাজ করছে। আমার এই সার্ভিসটির নাম দিলাম COVIS (COVID-19 Vulnerability Indexing System).  এই সার্ভিসটিতে দশটি প্রশ্ন রয়েছে এবং প্রত্যেকটি প্রশ্নের বিপরীতে চারটি অপশন রয়েছে। ইউজার তার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য দিয়ে দশটি প্রশ্নের উত্তর দিবেন। পরবর্তীতে ব্যবহারকারী নিজেই বুঝবেন করোনাভাইরাসে উনি কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ। সব ব্যবহারকারীর কথা চিন্তা করে এই সার্ভিসটি বাংলায় (ইউনিকোডে) করা হয়েছে। এই সার্ভিসটিতে করোনাভাইরাস বিস্তার ও প্রতিরোধের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা রয়েছে যা  করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সহায়ক। পাশাপাশি এই এপ্লিকেশনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হটলাইন নম্বর রয়েছে যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে পারবে।

আইসিটি বিষেজ্ঞদের কাছে হয়ত এই সার্ভিসটি খুবই ছেলে খেলনার মত মনে হবে, অপরিপক্ব সার্ভিস মনে হবে, আসলেই তাই। তবে আমার কাছে এর কদর অনেক বেশি, জাতির এই দুর্যোগ সময়ে যদি আমার এই সার্ভিসটি কারও একটু খানি আতংক কমিয়ে দেয় বা কারও যদি একটু তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে তবেই আমি স্বার্থক। এই সার্ভিসটি কে আরও আপডেট, ব্যবহার উপযোগী ও বহুমুখী উদ্দেশ্যে ব্যবহারে আপনাদের সহযোগীতা চাই।

সর্বোপরি আমার এই এপ্লিকেশনটি উৎসর্গ করতে চাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কে। বঙ্গবন্ধু’র জন্ম শতবার্ষিকিতে এটা আমার দেওয়া ক্ষুদ্র উপহার।


মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০

করোনাভাইরাস রেসপন্স ও ওর্য়াকিং@হোম

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবাই প্রদেশে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব সর্বপ্রথম দেখা দেয়। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা ১১ মার্চ ২০২০ তারিখে এটাকে মহামারী হিসেব স্বীকৃতি দিয়েছে।বর্তমানে, পৃথিবীর প্রায়ই ১৬০ টি দেশের ১৮২,০০০ অধিক সংখ্যক লোক এই রুগে আক্রান্ত হয়েছে এবং সাত হাজারের অধিক লোক এই মহামারীতে মারা গেছে। আমাদের দেশেও এই রোগের রুগী সনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ^ব্যাপী নেওয়া হয়েছে ব্যাপক উদ্যেগ ও সর্তকতা। করোনাভাইরাসের এর বিস্তার প্রতিরোধে সম্প্রতি বাংলাদেশসহ বিশে^র প্রায় সব দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বাড়িতে অফিসের কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা, তাই বলে কি শিক্ষা ব্যবস্থা থেমে যাবে বা, অফিসের কাজ ঘরে  করা, তাই বলে কি কাজের গুনগতমান পরিবর্তন হবে বা আমরা কি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব! এই সমস্যার সমাধানে আমরা হাতে নিতে পারি বেশ কিছু পদক্ষেপ যেমন; ই-ক্লাস রুম, ভার্চুয়াল শ্রেণী কক্ষ, ই-অফিস, ই-মিটিং ইত্যাদি। এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে বেশি খরছের ও প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তবে নি¤েœাক্ত বিষয়গুলোর দিকে নজর ও সমন্বয়  সমন্বয় করতে হবে, যেমন;

বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করতে যাওয়ার আগে আপনার টিমে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও ব্যবহারিক জ্ঞান ও দক্ষতা আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। নি¤েœাক্ত সরঞ্জামাদি প্রক্রিয়া ও জ্ঞান নিশ্চিত করতে পারলে বাড়িতে বসেও অফিসের প্রয়োজনীয় সব কাজ ও পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। উল্লেখ্য যে, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের বহু তরুন এখন ঘরে বসেই বিদেশের কাজ করেছেন।

তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান সমৃদ্ধ একটি দল গঠন করুন বা তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানে সহকর্মীদের প্রশিক্ষিত করুন। এমন একটি দল গঠন করুন যেখানে সবাই কানেকটেড থাকতে পারে। দলের সদস্যদের মেইলের তালিকা সংগ্রহ করুন বা একটি কমন মেইল আইডি খুলুন যার মাধ্যমে সবাইকে একই সময়ে তথ্য বিন্যাস, বন্টন ও সম্পৃক্ত করা যায়। প্রয়োজনে দ্রুত সিদ্ধাš Íগ্রহনের জন্য চ্যাট রুম চালু করুন, যেমন; স্কাইপি/জুম/মেসেঞ্জার/ওয়াট্স অ্যাপ ইত্যাদি।

আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো শেয়ারড অপশন বা শেয়ারড ড্রাইভ রাখুন । যাতে করে আপনার টিমের সদস্যরা যে কোন অবস্থান থেকে যে কোন গ্যাজেট/ডিভাইস থেকে সহজে প্রবেশ করতে পারে। এই শেয়ারড ড্রাইভ থেকে সহজেই তথ্য ব্যবহার, কাজের নির্দেশনা, আপডেট ও কমেন্ট করতে পারে। এবং দিনের শেষে সম্পাদিত কাজেগুলো উক্ত শেয়ারড ড্রাইভে আপডেট বা সংরক্ষণ করতে পারে।

অনলাইন ইভেন্ট তৈরী করে মেইলের মাধ্যমে আপনার দলের/টিমের সদস্যদের ই-মিটিং এর আয়োজন করতে পারেন। যার মাধ্যমে আপনার টিমের সদস্যদের আপডেট ও প্রয়োজনীয় সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। এটি খুবই একটি ভালো মাধ্যম, নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ইভেন্ট এর সময় মনে করিয়ে আপনাকে ও আপনার টিমের সদস্যদের নোটিফিকেশণ দিবে। ই-মিটিং চলাকালীন সময়ে আপনি প্রয়োজনীয় ফাইল বা তথ্যাদি শেয়ার করতে পারবেন। এবং ভবিষৎ রেফারেন্স এর জন্য রেকর্ড রাখতে পারেন।

উপরোক্ত সরঞ্জামাদি ও জ্ঞান নিশ্চিত করতে পারলে, আপনার টিম ঘরে বসে অফিসের কাজ ও শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে পাঠদানের  আবহ তৈরী হবে। তবে এই ক্ষেত্রে সবাই একই পেইজে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি টিম ম্যানেজার নিশ্চিত করতে হবে।

আপনার সহকর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে প্রতিদিনই ই-মিটিং করতে পারেন। বাড়িতে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক স্টাফ নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে করতে পারে, এই ক্ষেত্রে ভিডিও কনফারেন্স হতে পারে অন্যতম কৌশল যার মাধ্যমে সব সহকর্মীকে কানেকটেড রাখা যায়। ভিডিও কনফারেন্স এর সময় সমস্ত সহকর্মীদেরকে ক্যামেরায় দৃশ্যমান করার চেষ্টা করুন এবং প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করুন। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ক্লাস লেকচার রেকর্ড করে রাখতে পারেন। যা পরে অস্পষ্ট বিষয়গুলো বুঝতে সহায়তা করবে। কমিউনিটি রেডিও এবং টেলিভিশন প্রচার করতে পারে বিশেষ শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান।

কর্মীদের প্রতিদিনের নির্ধারিত কাজগুলো আপডেট জানুন। প্রয়োজনে একক বা গ্রুপ চ্যাট করুন। শিক্ষার্থীরা গুগল ক্লাসরুম ব্যবহার করতে পারেন। যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের এসাইনমেন্ট জমা দিতে পারেন। শিক্ষক তার রির্সোস ম্যাটেরিয়াল শেয়ারড করতে পারেন।

এইক্ষেত্রে ম্যানেজারকে অবশ্যই ভালো শিষ্টাচারের অধিকারী হতে হবে। আপনার সহকর্মী অফিসে না থাকার অর্থ এই নয় যে তারা ব্যস্ত নয়। ই-মিটিং এর সময় নির্ধারন করার আগে আপনার ক্যালেন্ডার এর ইভেন্ট ভালো করে খেয়াল করুন যাতে, করে আপনার সহকর্মীর অন্যান্য ইভেন্ট এর সাথে সাংঘর্ষিক না হয়। প্রয়োজনে চ্যাট করতে চাইলে ঐ সময় তার জন্য উপযুক্ত কিনা সেটা আগে নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে আপনি আপনার ক্যালেন্ডারের ইভেন্ট সমূহ, অপনার সহকর্মীদের সাথে শেয়ার করে রাখুন। আপনার কোন সহকর্মী যদি আপনার সাথে সভা করতে চায়, তাহলে সে সক্রিয়ভাবে নোটিফিকেশন পাবে। যার ফলে যোগাযোগে আর কোন জটিলতা তৈরী না হয়। এই ক্ষেত্রে আপনি গুগল ক্যালেন্ডার বা বিভিন্ন অ্যাপস রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

আর সব সময় নেটওর্য়াকের মধ্যে সম্পৃক্ত থাকতে চাইলে আপনার গ্যাজেটে ইন্টারনেট সংযোগ বা ওয়াইফাই কানেকশন রাখুন। তবে ভিডিও কনফারেন্সে সারা দিন ব্যায় করবেন না। আপনার টিমের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে চ্যাট রুম, শেয়ারড ডকুমেন্ট, অনলাইন সার্ভে বা কনফারেন্স কল ব্যবহার করুন। কোন মাধ্যমটি ব্যবহার করবেন সেটি অনেকটা নির্ভর করবে, আপনার টিমের সদস্যদের সহজলভ্যতার ও সুবিধার উপরে।

কিভাবে টিমের সদস্যদের সাথে ভালো ভিডিও কনফারেন্স করবেন তার একটি লিংক এখানে দেওয়া হল। আগ্রহীরা ব্রাউজ করতো পারেন। ভিডিও কনফারেন্স টিপস। 

তাছাড়াও বাসায় বসে কিভাবে অফিসের কাজ করা যায় তার একটি ভিডিও রিসোর্স লিংক নি¤েœ দেওয়া হল। আগ্রহীরা ব্রাউজ করতো পারেন। ওর্য়াকিং@হোম টিপস। 

আর এভাবে আমরা মহামারী করোনাভাইরাসের এর প্রভাব থেকে নিজেদের দুরে রাখতে পারি। আমাদের অর্পিত কাজগুলো যথাসময়ে শেষ করতে পারি।

রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

মোবাইল ওয়্যারলেস জেনারেশন (জি) টেকনোলজির বিবর্তন ও আসন্ন ফাইভ জি’র জন্য আমরা কতটুক প্রস্তুত

মানবসভ্যতার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত তিনটি শিল্পবিপ্লব পাল্টে দিয়েছে সারা  বিশ্বের গতিপথ তাদের মধ্যে ১৯৬৯ সালে আবিস্কৃত ইন্টারনেট অন্যতম, যার মাধ্যমে তৃতীয় শিল্পবিপ্লব ঘটে। এই ইন্টারনেট আবিস্কার পৃথিবীর শিল্প উৎপাদনের মাত্রা কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং পৃথিবীকে বিনা সুতায় গেথে ফেলে দিয়েছে। দূরত্বকে নিয়ে এনেছে হাতের মুঠোয়, পৃথিবীকে পরিণত করেছে গ্লোবাল গ্রামে। ইন্টারনেট আবিস্কারের ফলে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ওয়্যারলেসের নেটওর্য়াক আসে ব্যাপক পরিবর্তন। মোবাইল ওয়্যারলেস জেনারেশন (জি) সাধারণত সিস্টেমের গতি, প্রযুক্তি, ফ্রিকোয়েন্সি, ডাটা সক্ষমতা ও বিলম্বিতা ইত্যাদির পরিবর্তনকে বুঝায়। প্রতিটি প্রজন্মের কিছ ু মান,  ভিন্ন ক্ষমতা, নতুন কৌশল ও বিশেষত্ব রয়েছে যা পূর্বের জেনারেশন থেকে স্বতন্ত্র। মোবাইল ওয়্যারলেসে যোগাযোগের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১জি এর মধ্য দিয়ে পরবর্তীতে ২জি, ৩জি, ৪জি এবং ৫জি আসন্ন। এই লেখার মাধ্যমে মোবাইল ওয়্যারলেস জেনারেশন’স (জি) এর মান, ডাটা রেট, ক্যাপাসিটি, প্রাথমিক সেবা, চ্যালেঞ্জ এবং বৈশিষ্ট তুলনামূলক আলোচনা সহ আসন্ন মোবাইল ওয়্যারলেস জেনারেশন ৫জি’তে কি কি পরিবর্তন ও চমক থাকছে তা সংক্ষেপে বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

ফাস্ট জেনারেশন (১ জি)
১৯৮১ সাল থেকে মোবাইল সেলুলার যুগ শুরু হয়েছিল এবং তারপর থেকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল। ধারনা করা হয় ১৯৭৯ সালে জাপানের এনটিটি দ্বারা প্রথম বাণিজ্যিক স্বয়ংক্রিয় সেলুলার নেটওর্য়াকটি চালু করা হয়েছিল। এটি শুধু মাত্র ভয়েস প্রেরণ এর জন্য ব্যবহ্রত হয়েছিল। এখানে ব্যবহ্যত প্রযুক্তিকে বলা হত এডভান্স মোবাইল ফোন সিস্টেম (এএমপিএস)। এতে ব্যবহ্যত চ্যানেলের ক্ষমতা ছিল ৩০ কিলোহার্টজ, ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড ছিল ৮২৪-৮৯৪ মেঘাহার্টজ এবং ডাটা স্পীড ছিল ২.৪ কিলোবাইটস পার সেকেন্ডে  (কেবিপিএস)।

সেকেন্ড জেনারেশন (২ জি)
১৯৮০ দশকের শেষের দিকে সেকেন্ড জেনেরেশন ২ জি মোবাইল আবির্র্ভূত হয়েছিল। এটি ভয়েস ট্রান্সমিশনের জন্য ডিজিটাল সংকেত ব্যবহার করেছে। এই প্রযুক্তির মূল ফোকাস ছিল ডিজিটাল সংকেত এর মাধ্যমে কম আয়তনের টেক্সট ও ছবি পাঠানো যেত। এটি ৩০ থেকে ২০০ কিলোহার্টজ এর ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ২জি ২.৫জি’তে রুপান্তরিত হয়ে প্যাকেট সুইচড এবং সার্কিট সুইচড এর মাধ্যমে ডাটা ১৪৪ কিলোবাইটস পার সেকেন্ড রেটে ট্রান্সমিশন করতে পেরেছে। যেমন জিএসএম  গ্লোবাল সিস্টেমস ফর মোবাইল (জিএসএম), জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস (জিপিআরএস) ও এনহান্সড ডাটা রেইটস ফর জিএসএম ইভ্যুলুশ্যান (ইডিজিই)। এই ২জি’র মাধ্যমে ডাটা’র গতি ৬৪ কেবিপিএস পর্যন্ত হতে পারে ও ট্রান্সমিশন করা যায় টেক্সট, ছবি এবং মাল্টিমিডিয়া মেসেজ।

২.৫ জি
এই জিএসএম প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও উন্নত সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে যা ২জি এবং ৩জি মাঝামাঝি যেমন; মোবাইলে ই-মেইল প্রেরণ ও গ্রহন, ওয়েব ব্রাউজিং, ডাটা ট্রান্সমিশন ৬৪-১৪৪ কেবিপিএস এবং ক্যামেরা ফোন।

থার্ড জেনারেশন (৩ জি)
থার্ড জেনারেশন (৩ জি) মোবাইল নেটওর্য়াক চালু হয়েছিল ২০০০ সালে জিএসএম ভিত্তিক সেলুলার ফোনে। এই প্রযুক্তির লক্ষ্য ছিল উচ্চ গতির ডাটা সরবরাহ করা। এটিতে ওয়াইড ব্যান্ড ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এই প্রযুক্তিতে ডাটার ভলিয়ম বৃদ্ধি করা হয়েছে,  যাতে মোবাইলে টেলিভিশন/ভিডিও দেখা যায় এবং গ্লোবাল রুমিং করা যায়। এটি ২১০০ মেঘাহার্টজ ব্যপ্তিতে কাজ করে এবং ব্যান্ডউইথ (ব্যান্ডউইথ হল কোনো নেটওর্য়াক মাধ্যমের একক সময়ে সর্বাধিক যে পরিমাণ ডাটা এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে প্রেরণ। এটি নির্ণয়ের একক হল বিট পার সেকেন্ড (বিপিএস)/ মেগাবাইটস পার সেকেন্ড/ গিগাবাইটস পার সেকেন্স)। ১৫-২০ মেঘাহার্টজ ব্যবহার করে উচ্চগতির ইন্টারনেট এর মাধ্যমে ভিডিও চ্যাটিং করা যায়। এই প্রযুক্তির মোবাইল ফোনে ডাটা ট্রান্সমিশন গতি ২ এমবিপিএস যার মাধ্যমে সহজে যোগাযোগ, ভারী ইমেইল প্রেরণ ও গ্রহন, ভিডিও কল, মোবাইলে টিভি দেখা ও থ্রিডি গেমিং করা যায়। এজন্য একে স্মার্ট ফোন ও বলা হয়।

চতুর্থ জেনারেশন (৪ জি)
চতুর্থ জেনারেশন মোবাইল সিস্টেম হল সমস্ত আইপি ভিত্তিক নেটওর্য়াক সিস্টেম। ৪জি প্রযুক্তির প্রধান লক্ষ্য হল ভয়েস এবং ডাটা সার্ভিস, মাল্টিমিডিয়া এবং ইন্টারনেট ওভার আইপি জন্য হাই স্পিড, উচ্চ মানের, উচ্চ ক্ষমতা, নিরাপত্তা এবং কম খরচে সেবা প্রদান। এই প্রযুক্তিতে গতি ১০০ এমবিপিএস থেকে ০১ জিবিপিএস পর্যন্ত, উচ্চ মানের ভিডিও স্ট্রিমিং, ওয়াইফাই এবং ওয়াই-ম্যাক্সের সংমিশ্রণ এবং ব্যান্ডউইথ ৫-২০ মেগাহার্টজ পর্যন্ত। 

পঞ্চম জেনারেশন (৫ জি)
মোবাইল ফোনের পঞ্চম জেনারেশন ইন্টারনেটকে সংক্ষেপে ফাইভ জি বলে। অনেক দ্রুত গতিতে ইন্টারনেট তথ্য ডাউন লোড এবং আপলোড করা যাবে ফাইভ জি’র মাধ্যমে এবং এর সেবার আওতা হবে ব্যাপক। ৫জি’র মূল ফোকাস হবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে। এর মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়া সংবাদপত্রগুলো এবং টিভির প্রোগ্রাম অধিকতর স্পষ্ট দেখা যাবে। বিশ^ব্যাপি ৫জি শুরু হওয়ার কথা ২০২০ সালে, আর বাংলাদেশে ২০২১ সালের মধ্যেই ফাইভ জি নেটওর্য়াক চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। ফাইভ জি নেটওর্য়াক ১ গিগাবাইট পার সেকেন্ড গতিতে ডাটা ট্রান্সপার করবে।

ফাইভ জি নেটওর্য়াক চালু হলে বর্তমানের তুলনায় ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি গতির ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। চালক বিহীন গাড়ির ক্ষেত্রে সহায়তা করবে ফাইভ জি প্রযুক্তি। অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, উন্নত মানের ভিডিও আমাদের জীবনকে স্মার্ট করে তুলবে। ড্রোনের মাধ্যমে গবেষণা এবং উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা হবে। মোবাইল গেমাররা আরো বেশি সুবিধা পাবেন। ভিডিও কল আরো পরিস্কার হবে। সহজেই কোনোরকম বাধা ছাড়াই মোবাইলে ভিডিও দেখা যাবে। শরীওে লাগানো ফিটনেস ডিভাইসগুলো নিখুঁত সংকেত দিতে পারবে, জরুরী চিকিৎসা বার্তা পাঠাতে পারবে। ফাইভ জি সুবিধা পেতে নতুন কম্পিউটার চিপ দরকার হবে, অর্থাৎ প্রচলিত ফোনটি হয়তো পাল্টাতে হবে। হয়ত আপনার ফোর জি’র ফোনটিতে ও এটি কাজ করতে পারে। তবে প্রান্তিক এলাকার জনগণ এর সুবিধা পেতে সময় লাগবে, কারণ এটি উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির ব্যান্ডে কাজ করে। এটা একসঙ্গে অনেক মানুষকে সেবা দিতে পারে, কিন্ত এর আওতা ততটা বড় নয়।

মোবইল জেনারেশনের তুলনামূলক বিভাজন (Comparison of Mobile Generation: 1G to 5G)

আমরা মোবাইল জেনারেশনের কতটুকু সেবা টা পাচ্ছি?
বাংলাদেশে গত ১৯ শে ফেব্রুয়ারী ২০১৮ আনুষ্ঠানিকভাবে চতুর্থ প্রজন্মের টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বা ফোরজি সেবা চালু করে। কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে অভিযোগ রয়েছে অনেক স্থানেই এই ফোরজি সেবা এখনও পাওয় যায় না। এমনকি খুদঁ রাজধানীর অনেক জায়গায় এখনও ফোরজি নেটওর্য়াক পাওয়া যায় না, আর প্রান্তিক পর্যায়ে তা কল্পনাতীত। যেখানে বিশ্বে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের গড় গতি ১৬ এমবিপিএসের উপরে আর বাংলাদেশে তা গড় গতি ৪ এমবিপিএসের নিচে। আর যদি ২০২১ সালের মধ্যে ৫জি মোবাইল নেটওর্য়াক চালু করতে যাই সে ক্ষেত্রে আমাদের সবার আগে বাংলাদেশের সব জায়গায় ফোরজি সেবা নিশ্চিত করতে হবে। অপরদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন মতে ২০২০ সালের মধ্যে সারাদেশে ফোরজি বিস্তৃতি সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ফোরজি ইন্টারনেটের গতি  কত হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন ধারনা দিচ্ছে না মোবাইল অপারেটররা। সেই বিষয়ে আমাদের ভাবা উচিত। 


ইন্টারনেট স্পিড পরিমাপ করার কিছু লিংক নি¤েœ দেওয় হল, যার মাধ্যমে আমরা নিজে নিজেই ইন্টারনেটের স্পিড পরিমাপ করতে পারি যেমন;
পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন অ্যাপস এর মাধ্যমেও আমরা আমাদের মোবাইলের ইন্টারনেট স্পিড পরিমাপ করতে পারি যেমন;
SpeedSmart

V-SPEED
Meteor

পরিশেষে, বলতে চাই চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বাংলাদেশের শুধু বিভাগীয় শহরে নয় প্রান্তিক পর্যায়ে মোবাইল ওয়্যারলেসের নেটওর্য়াক ফাইভ জি লেভেলে নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বের সংঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রস্তত থাকতে হবে।