বুধবার, ৩১ মে, ২০১৭

ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড: চাটগাঁ এপিসোড (জলাবদ্ধতা)

টিকে থাকার লড়াইয়ে আমাদের অনেক কিছুই জানতে হয় আজ আমরা জানাব কীভাবে বৃষ্টি হলে চট্টগ্রামে যাতায়ত করতে হয়। আমাদের মাষ্টার ট্রেইনার আশরাফ মিয়া শেখাবেন বৃষ্টি হলে কিভাবে চট্টগ্রামের রাস্তায় নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অফিসে পৌছানো যায়। আমি সরাসরি চলে যাচ্ছি আশরাফ মিয়ার কাছে।

আমি আশরাফ মিয়া এখন আছি হালিশহর বড় পুলের কাছে, এ মুহূর্তে আমার ঘড়েিত সময় সকাল ৭ টা কুড়ি মিনিট। আমাকে ঠিক ৯টার মধ্যে চান্দগাওঁ আবাসিকে অবস্থিত আমার অফিসে পৌছতে হবে। আমার হাতে আছে ০১ ঘন্টা ৪০ মিনিট। তাই দেরি না কর মিশন শুরু করা যাক। আমি ৪০ মিনিট ব্যায় করব আমার সরজ্ঞাম তৈরি করতে এবং বাতি এক ঘন্টা ব্যায় করব যাতায়তে। প্রথমেই আমাকে খুজে বের করতে হবে একটা পলিথিন ব্যাগ। সারা বাসা খুজ করার পর বাতিজার বালিশে নিচে পাওয়া গেল স্কাই শপের মাঝারি পলিথিন ব্যাগ। অফিসে পরিধেয় ফরমাল ফুল হাতের শার্ট, প্যান্ট, মোজা, জুতা এবং একটা গামছা আমি ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলাম। এবার টাইট করে একটা গিট্টু দিয়ে ব্যাগটির মুখ বন্ধ করে দিলাম। এই ব্যাগটি বৃষ্টি এবং রাস্তার কাদাপানি থেকে আমার পোশাকগুলো রক্ষা করবে। পরবর্তী ধাপে আমাকে তৈরী করতে হবে একটা ভেলা যা আমাকে কোমর পানিতে চলতে সাহায্য করবে ও গণ-পরিবহনের সার্পোট দিবে। বৃষ্টি পাতের কথা চিন্তা করে আমি প্লাষ্টিকের পানির বোতল, স্প্রাইট এর বোতল, দাদা সয়াবিনের বোতল ও ককশিট সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম। সেগুলো এখন কাজে লাগাতে হবে। আমি ঘরের আনাচ-কানাচ খুজে সব বোতল ও ককশিট এক স্থানে জড়ো করলাম। তারপর দড়ি দিয়ে বেঁধে বোতল ও ককশিট দিয়ে ভেলা বানালাম। ভেলাটি আমাকে বহন করতে যথেষ্ট উপযুক্ত মনে হচ্ছে। তবে আসল পরীক্ষা হবে পানিরত নামার পর। ভেলার মধ্যে রাখতে হবে মাঝারি সাইজের দড়ি ও বৈঠার মত একটা কিছু। ওজন কমানোর জন্য বৈঠা হিসেবে মেলামাইনের প্লেট যথেষ্ট। মেলামাইনের প্লেট সহজে বহন করা যায়। তাছাড়া পথে ক্ষুধা পেলে এটি খাবার প্লেট হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ও সঙ্গে শরীফ ছাতা রাখতে ভুলবেন না। যাই হোক এবার আমি একটা হাফ পেন্ট এবং মাথায় একটা গামছা বেধেঁ আমার জিনিসপত্র পলিথিন ব্যাগে ঢুকিয়ে বেরিয়ে পরলাম। সকাল থেকে তুমুল বৃষ্টির কারনে ইতোমধ্যে শহরের সব রাস্তায় কোমর পানির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি সুবিধামত আমার তৈরী বেলা রাস্তার পানির মধ্যে নামিয়ে দিলাম। এবার খুব সাবধানে ভেলায় চেপে বসলাম। একটু এদিক-সেদিক হলে রাস্তার ময়লা পানিতে পওে যেতে হবে। এবার আস্তে আস্তে প্লেট মারতে লাগলাম জিইসি মোওে কিছু প্রাইভেট কার জোরে চলতে গিয়ে আমাকে ময়লা পানি দিয়ে প্রায়ই ভিজিয়ে দিচ্ছিল। কিন্ত আমি ছাতা দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে তা প্রতিহিত করতে সক্ষম হই। পথে পথে দেখলাম ভাড়ায় চলিত অনেক রিকসা, বেবী টেক্রি ও প্রাইভেট কার উল্টে পড়ে আছে। এবং অফিসমুখী মানুষের অফিসে যাবার ব্যার্থ চেষ্টা। এভাবে আরও অনেক বাধাঁ বিপত্তিকে হার মানিয়ে আমি ভিজিটর আসার পূর্বে অফিসে পৌছতে সক্ষম হলাম। এবার অফিস বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমার অফিসিয়াল পোশাক পরে নিলাম।