বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হল শ্রমশক্তি রপ্তানি খাত। বর্তমানে বাংলাদেশের এক কোটির উপর মানুষ এখন পৃথিবীর নানা দেশে অভিবাসী হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৬ সালে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ বাংলাদেশী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অভিবাসন করেছে। এই অভিবাসীর ৮১ শতাংশই অভিবাসন করেছে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোতে আর বাকি ১৯ শতাংশ অভিবাসন হয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়। পরিসংখ্যান মতে সবেচেয় বেশি বাংলাদেশি অভিবাসিত হয়েছে ওমানে যার সংখ্যা ১লক্ষ ৮১ হাজার আটশ ছয় জন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সৌদি আরব যার সংখ্যা একলাখ ২৫ হাজার পাঁচশত ৮৮ জন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে সম্প্রতী বহুল আলোচিত কাতার এ বছর (২০১৬) কাতার গিয়েছেন একলাখ ১৫ হাজার দুইশ ২২ জন। বাহারাইনে রয়েছে চতুর্থ স্থানে। সামগ্রিকভাবে এই সমমÍ দেশগুলোর রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমাদের দেশের অর্থনীতিকে ভাবিয়ে তুলে।
সম্প্রতি, সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশ ‘অস্থিতিশীলতা’ সৃষ্টির অভিযোগে কাতারের সঙ্গে পররাষ্ট্র সম্পর্ক বন্ধ করে দেয়। জবাবে ওই দেশগুলোর সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় কাতারও। এরপর বিভিন্ন দেশ নিজ নিজ কৌশল অনুযায়ী সমর্থন দেয় এ দুই পক্ষকে। ভৌগোলিক দিক থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশের দূরুত্ব অনেক হলেও এ দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে দেশ দুটির বড় প্রভাব রয়েছে। তাই এই সংকটের সময় বাংলাদেশ কাকে সমর্থন করবে! যেখানে জড়িয়ে আছে ৪ লক্ষ শ্রম অভিবাসির স্বার্থ ও তাদের পরিবারের ভাগ্য।
কাতারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০২২ সালে বিশ্বকাপ উপলক্ষে চলছে ব্যাপক নির্মাণকাজ। সেখানে শ্রম দিতে গেল বছরেই বাংলাদেশ থেকে গেছে অনেক নির্মাণ শ্রমিক। বর্তমান সংকটে সৌদির পক্ষে অবস্থান নিলে বিশাল এই জনশক্তির ওপর খারাপ প্রভাব আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সম্প্রতি সৌদি নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোটে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। কাতার এর মধ্যেই সেখানে কর্মরত সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ সম্পর্কচ্ছেদকারী দেশগুলোর নাগরিকদের চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। আর জানিয়েও দিয়েছে, সম্পর্কচ্ছেদকারী দেশের বন্ধুদের সঙ্গেও সম্পর্ক রাখার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে তারা। অন্যদিকে সৌদির নেতৃত্বে থাকা মার্কিন মিত্রজোটও এ বিষয়ে কঠোর। আমিরাত, সৌদিসহ অন্যান্য দেশ জানিয়ে দিয়েছে, কাতারের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না তারা।
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ইতিহাসটা বেশ পুরোনো। বাংলাদেশ থেকে সৌদিতে রপ্তানি করা জনশক্তির পরিমাণটাও নেহাত কম নয়। দীর্ঘদিন শ্রমিক পাঠানো বন্ধ ছিল গত বছর সরকারের প্রচেষ্ঠায় সেটা আবার শুরু হয়। আর কাতারেও অবস্থান করছে বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক। তাঁদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে অনেকটাই চাঙ্গা রেখেছে। তাই দুই পক্ষের সঙ্গেই বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো রাখাটা জরুরী।
I think so government is now thinking this issue.
উত্তরমুছুন